"কসমিক সেক্স" প্রাপ্তবয়স্ক নয় প্রাপ্তমনস্কের ছবি, না এটা যুবকদের ভুল পথে নেয়া
"A blog about social networking and web design." Health Tips For All, Entertainment, News. Its Fine and Lovely.
২০১২ সালে নির্মান হওয়া কোনো ছবি যদি ২০১৫ সালে মুক্তি পায়, স্বাভাবিকভাবেই মানুষের কৌতুহল থাকবে গাঁটছাড়া; তাও যদি মুক্তি পেতো আর আর দশটা ছবির মতোন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়! হ্যাঁ, বলছিলাম অমিতাভ চক্রবর্তীর বানানো ছবি ‘কসমিক সেক্স’-এর কথা। যা কলকাতা ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের নানা প্রতিবন্ধকতার পর অভিনব পদ্ধতিতে গত ১ ফেব্রুয়ারি ইন্টারনেটে পৃথিবী ব্যাপী মুক্তি দেয়া হয়।
ছবিটি মুক্তির আগ থেকে এখন অবধি ‘কসমিক সেক্স’কে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে বিশেষায়িত করেছেন এবং করছেন। কেউ বলছেন, ভিন্ন স্বাদের ছবি,কেউ বলছেন বিতর্কিত ছবি, কেউ আবার অশ্লীল আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ ছবি হিসেবেও নাম করছেন। তো ওইদিন ইন্টারনেটেই দেখে ফেললাম নিষিদ্ধ ছবিটা!
ছবি দেখার পর মনে হলো, আরে! মানুষ অকারণেই ছবিটাকে উগ্র যৌনতার নামে মস্ত ভুল করছে, অথচ এই ছবি মোটেও যৌনতাকে পুঁজি করে তৈরি করা হয় নি, এই ছবি সমাজে অশ্লীলতাকে উষ্কেও দিচ্ছে না; বরং যৌনতাকে কিভাবে সাধন-ভজনের মাধ্যমে দমন করা যায়, নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা দেহতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণসহ ছবিতে দেখানো হয়েছে। পরিচালক অমিতাভ চক্রবর্তীতো এটা নতুন কিছু উদ্ভাবন করে ছবিতে দেখান নি; শত বছর ধরে চলে আসা দেহতত্ত্বকে সাঙ্গ করে বাউল-ফকিরদের জীবনাচরণ,জীবনদর্শনকে পর্দায় উপস্থাপন করেছেন, মারফতিদের মধ্যে রীতিসিদ্ধ একটা বিষয়কে কোনো ধরণের ছাড় না দিয়েই প্রায় হুবহু চিত্রায়ন করার চেষ্টা করেছেন মাত্র! মনের মানুষ, লালন কিংবা বাউল দর্শন নিয়ে করা আর আর সিনেমাগুলোতে বাউলদের এইরম জীবনাচরণ,যাপন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।
এখন বাউল দর্শনকেই যদি আপনার অশ্লীল মনে হয়, তাহলে অবশ্য ভিন্ন কথা। হ্যাঁ, কিছু বিতর্কিত সিন ছবিতে আছে বটে যেগুলোকে অশ্লীল আখ্যা দেয়া হচ্ছে; কিন্তু ওইগুলোতো বিকৃত, কিংবা রগরগে করে প্রদর্র্শিত হয়নি বরং খুবই শৈল্পিক উপস্থানার মাধ্যমে নির্মাতা আমাদের দেখিয়েছেন। এখন কেউ যদি সেক্সকে অশ্লীল বলে মনে করেন এবং ভাবেন সেক্সকে যতো শৈল্পিকভাবেই উপস্থাপন করুক না কেনো, সেক্সতো সেক্স-ই আর তা অশ্লীল; তাহলে তার সাথে এই বিষয়ে কোনো কথা নেই, থাকতে পারে না।
অমিতামভ চক্রবর্তী সম্পর্কে যারা জানেন, তারা নিশ্চয় অবগত আছেন বাউল-ফকির বা সাধকদের প্রতি তার আগ্রহের কথা। এর আগে তিনি বাউলদের উপর বানানো তথ্যচিত্র ‘বিশার ব্লুজ’ নির্মাণ করে অর্জন করেছেন জাতীয় পুরষ্কার। যথারীতি দু হাজার বারো সালে নির্মিত এবং দু হাজার পনেরতে মুক্তি পাওয়া ‘কসমিক সেক্স’ ছবিটাও বাউল-সাধকদের দর্শন নিয়েই। ছবির শুরুটা দেখে মনে হয়েছে এটি একটি সেক্স এন্ড ভায়োলেন্স নির্ভর কোনো বাণিজ্যিক ধারার মহড়া, কিন্তু এরপরই পাল্টে যেতে থাকে দৃশ্যপট; আমরা প্রবেশ করি মূল গল্পে।
ছবির কাহিনীটা এরকম: বাবা ও বিমাতার সাথে বাস করে ১৮ বছরের মাতৃহীন যুবক কৃপা শঙ্কর রায়। একদিন ব্রহ্মচর্য ও গান্ধীজীর উপর গিরিজ কুমারের লেখা ‘ব্রহ্মচর্যা গান্ধী এন্ড হিস ওমেন এসোসিয়েট’ বইটি পড়ে সে সেক্স সম্পর্কে জানতে উৎসুক হয়ে উঠে। বিমাতার সাথে এইসব বিষয় নিয়ে সে কথাবার্তাও বলে; বিমাতা বুঝতে পারে কৃপার আসল উদ্দেশ্য। বিমাতাকে জড়িয়ে ধরার মুহূর্তে বাবা দেখে ফেলে, স্বজোরে ধাক্কা দিয়ে বাবাকে ফেলে দেয় কৃপা। রক্তপাত ঘটে, বাবার মৃত্যু হয়েছে ভেবে ঘর থেকে দৌড়ে পালায় সে, আত্মহত্যা করার মনস্থির করে। এমন সময় রাতের রাস্তায় পরিচয় ঘটে দেবী নামের এক যৌনকর্মীর সাথে; সে ভালোবেসে কৃপাকে নিজের ঘরে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে প্রেম হয়, মিলন হয়, সঙ্গম হয়! আবার বিপত্তি ঘটে, দেবীর দালাল এক হিজরা; যে কি না কৃপাকে দেখে পছন্দ করে ফেলে। তাকে চুম্বন করতে চায়, ফলে পুনরায় জোর-জবরদস্তি চলে; ধাক্কা দিয়ে হিজরাকে ফেলে দেয় কৃপা। আবার রক্তপাত, রাতের অন্ধকারে আবার দৌড়ে চলা! এই রাত যেনো রক্তপাত,খুন ও দৌড়ে পালানোর!!
তার পরদিন গঙ্গায় স্নানরত এক মহিলাকে দেখে কৃপা, যার চেহেরা হুবুহু তার মায়ের মতো। সে মহিলার কাছে গিয়ে নিজেকে সঁপে দেয়; এবং তাকে 'মা' বলেই সম্বোধন করে। রক্তপাত,খুন ও দৌড়ে পালানোর সব কথাই মহিলাকে বিস্তারিত বলে। মহিলাও তাকে পুনর্জন্ম পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়!
এরপর ফ্ল্যাশ-ব্যাকে আমরা দেখি ওই মহিলাটির আসল পরিচয়। তার নাম সাধনা। এক মারফতি ফকিরের কাছে লালন পালন হয়েছেন; ওই ফকিরের কাছেই দেহতত্ত্বের দীক্ষা নিয়েছেন। তাত্ত্বিক জ্ঞানেও সাধনা সমান পারদর্শি। কাম রিপুর নিয়ন্ত্রণহীনতার জন্যই পৃথিবীতে যতো হিংসা,দ্বেষ আর মানুষে মানুষে খুনোখুনি সংগঠিত হয় বলে মনে করে সে। সেক্সকে উপেক্ষা করে নয়, বরং সেক্সের মাধ্যমেই কিভাবে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব, এইসব দেহতত্বের নানান কলা কৌশল পরম মমতায় কৃপাকে শেখায় সাধনা।
অমিতামভ চক্রবর্তী সম্পর্কে যারা জানেন, তারা নিশ্চয় অবগত আছেন বাউল-ফকির বা সাধকদের প্রতি তার আগ্রহের কথা। এর আগে তিনি বাউলদের উপর বানানো তথ্যচিত্র ‘বিশার ব্লুজ’ নির্মাণ করে অর্জন করেছেন জাতীয় পুরষ্কার। যথারীতি দু হাজার বারো সালে নির্মিত এবং দু হাজার পনেরতে মুক্তি পাওয়া ‘কসমিক সেক্স’ ছবিটাও বাউল-সাধকদের দর্শন নিয়েই। ছবির শুরুটা দেখে মনে হয়েছে এটি একটি সেক্স এন্ড ভায়োলেন্স নির্ভর কোনো বাণিজ্যিক ধারার মহড়া, কিন্তু এরপরই পাল্টে যেতে থাকে দৃশ্যপট; আমরা প্রবেশ করি মূল গল্পে।
ছবির কাহিনীটা এরকম: বাবা ও বিমাতার সাথে বাস করে ১৮ বছরের মাতৃহীন যুবক কৃপা শঙ্কর রায়। একদিন ব্রহ্মচর্য ও গান্ধীজীর উপর গিরিজ কুমারের লেখা ‘ব্রহ্মচর্যা গান্ধী এন্ড হিস ওমেন এসোসিয়েট’ বইটি পড়ে সে সেক্স সম্পর্কে জানতে উৎসুক হয়ে উঠে। বিমাতার সাথে এইসব বিষয় নিয়ে সে কথাবার্তাও বলে; বিমাতা বুঝতে পারে কৃপার আসল উদ্দেশ্য। বিমাতাকে জড়িয়ে ধরার মুহূর্তে বাবা দেখে ফেলে, স্বজোরে ধাক্কা দিয়ে বাবাকে ফেলে দেয় কৃপা। রক্তপাত ঘটে, বাবার মৃত্যু হয়েছে ভেবে ঘর থেকে দৌড়ে পালায় সে, আত্মহত্যা করার মনস্থির করে। এমন সময় রাতের রাস্তায় পরিচয় ঘটে দেবী নামের এক যৌনকর্মীর সাথে; সে ভালোবেসে কৃপাকে নিজের ঘরে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে প্রেম হয়, মিলন হয়, সঙ্গম হয়! আবার বিপত্তি ঘটে, দেবীর দালাল এক হিজরা; যে কি না কৃপাকে দেখে পছন্দ করে ফেলে। তাকে চুম্বন করতে চায়, ফলে পুনরায় জোর-জবরদস্তি চলে; ধাক্কা দিয়ে হিজরাকে ফেলে দেয় কৃপা। আবার রক্তপাত, রাতের অন্ধকারে আবার দৌড়ে চলা! এই রাত যেনো রক্তপাত,খুন ও দৌড়ে পালানোর!!
তার পরদিন গঙ্গায় স্নানরত এক মহিলাকে দেখে কৃপা, যার চেহেরা হুবুহু তার মায়ের মতো। সে মহিলার কাছে গিয়ে নিজেকে সঁপে দেয়; এবং তাকে 'মা' বলেই সম্বোধন করে। রক্তপাত,খুন ও দৌড়ে পালানোর সব কথাই মহিলাকে বিস্তারিত বলে। মহিলাও তাকে পুনর্জন্ম পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়!
এরপর ফ্ল্যাশ-ব্যাকে আমরা দেখি ওই মহিলাটির আসল পরিচয়। তার নাম সাধনা। এক মারফতি ফকিরের কাছে লালন পালন হয়েছেন; ওই ফকিরের কাছেই দেহতত্ত্বের দীক্ষা নিয়েছেন। তাত্ত্বিক জ্ঞানেও সাধনা সমান পারদর্শি। কাম রিপুর নিয়ন্ত্রণহীনতার জন্যই পৃথিবীতে যতো হিংসা,দ্বেষ আর মানুষে মানুষে খুনোখুনি সংগঠিত হয় বলে মনে করে সে। সেক্সকে উপেক্ষা করে নয়, বরং সেক্সের মাধ্যমেই কিভাবে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করা সম্ভব, এইসব দেহতত্বের নানান কলা কৌশল পরম মমতায় কৃপাকে শেখায় সাধনা।
তাই পরিচালক অমিতাভ চক্রবর্তী তাঁর ছবি সম্পর্কে ব্যাখা করতে গিয়ে বলেন ‘সেক্সের মাধ্যমে কীভাবে ঈশ্বরকে অর্জন করা সম্ভব,সেই সম্ভবনা এক্সপ্লোর করা হয়েছে এই ছবিতে৷ সেক্সুয়াল এনার্জি সাধারণত যেভাবে ফ্লো করে তা হল, অ্যাট্রাকশন, কোপুলেশন অরগ্যাজম, ইজাকুলেশন , বার্থ, লাইফ , ম্যারেজ অফ চিল্ড্রেন, ওল্ড এজ এবং ডেথ৷ নিজেদের মধ্যের এই সেক্সুয়াল ফ্লো কে কি উল্টোপথে প্লাবিত করা সম্ভব? তার উত্তরই খোঁজার চেষ্টা রয়েছে এই ছবিতে৷'
ব্রহ্মচারি সাধকরা মনে করেন, সেক্স হচ্ছে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠার অন্তরায়; তাই একে ত্যাগ করতে হবে। বাউলরাও বলছেন কামের জন্যই মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারে না কিন্তু তাই বলে ছ'টি রিপুর মধ্যে প্রধান কামরিপুকে উপেক্ষাও করা সম্ভব না; আবার এটাকে অতিক্রম করতে না পারলে মনের মানুষের খুঁজও পাওয়া সম্ভব না।
মানে এক ধরণের পারস্পারিক সংঘাতময় একটি ব্যাপার আর কি! তবে কামকে যেহেতু উপেক্ষা করা সম্ভব না, তাই কামকে জয় করতে হবে রূপান্তরের মাধ্যমে। কামকে প্রেমে রূপান্তরিত করলেই কেবল মানুষের মুক্তি। মানুষকে মূল্যবোধ সম্পন্ন একজন হয়ে উঠতে হলে কাম,যৌনতাকে ত্যাগ করে নয় বরং জয় করেই হয়ে উঠতে হবে। কসমিক সেক্সের প্রধান উপজীব্য ‘সেক্স’ বা ‘কাম’ হলেও সমাজে ফকিরদের মূল্যায়ন,হিন্দু ব্রহ্মচর্য,শরিয়ত আর মারফতের যে দ্বন্দ্ব সমাজে জারি আছে তার সফল চিত্রায়ন করেন অমিতাভ চক্রবর্তী। ছবিতে ব্রহ্মচর্য যে প্রকৃতি বিরুদ্ধ একটি কাজ, তাও কৃপা ও সাধনা মায়ের কথোপকথনের মাধ্যমে আমরা বুঝে নেই। ব্রহ্মচর্য হচ্ছে কাম- বাসনাশূণ্য জীবন যাপন, যা আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য অপরিহার্য। অথচ দেহতাত্ত্বিকরা মনে করেন, সেক্স ত্যাগ করে ব্রহ্মচর্যা হয় না। কঠোর ব্রহ্মচর্যা পালন মারাত্মক ধরণের প্রকৃতি বিরুদ্ধ কাজ; তাছাড়া গুরুহীন সাধনায় কৃচ্ছ্রসাধনও হয় না। দেহতত্বের সাথে ব্রহ্মচর্যের এমন অমিলও খুবই নিখুঁত, অথচ প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করেন পরিচালক। ছবিতে ব্রহ্মচর্যার কথা বলতে গিয়ে গান্ধীজির কথাও আমরা শুনি, তিনি কিভাবে ব্রহ্মচর্যের পরীক্ষা দিতে গিয়ে নগ্ন হয়ে রাতে নারীদের সাথে ঘুমাতেন। অন্যদিকে শরীয়তী আর মারফতীবাদীদের আদর্শিক যে দ্বন্দ্ব সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, তারও প্রকোপ আমরা দেখি এই ছবিতে। সাধক গুরুর স্ত্রী আমিনার মৃত্যু সংবাদের মধ্য দিয়ে পরিচালক সেই প্রচলিত দ্বান্দিক ব্যাপারটা খুব চমৎকারভাবে আমাদের সামনে নিয়ে আসেন। শরিয়তি হুজুরদের চোখে মারফতি ফকিররা ধর্মীয় দৃষ্টিকোন দিয়ে কতোটা ঘৃণার পাত্র, তা সাধক গুরুর মৃত স্ত্রীর সমাজে ঘোর না পাওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা দেখি। নিজে শরিয়তি নিয়ম কানুন মানার পরও শুধুমাত্র মারফতি ফকিরের স্ত্রী হওয়ার দরুন আমিনার দাফন কিংবা জানাজা পড়ায়নি শরিয়তি মৌলানা-হুজুরগণ! ছবিটি বাউল দর্শন আর দেহতত্বকে কেন্দ্র করে হলেও পরিচালক এর মাধ্যমে বোধয় আমাদের যাপিত জীবনে সেক্স সম্পর্কে সচেতনত করারও প্রয়াস খুঁজেছেন। এই যেমন সাধনাকে দেখি কৃপাকে কাম সম্পর্কে তাত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে খোলাখুলি জ্ঞান দিচ্ছে, সেক্স কি, এর উৎস কোথায়; যাপিত জীবনে সেক্সের প্রভাব কতোটুকু। কাম প্রথমে মনে জাগে, তারপর শরীরে। হস্তমৈথুন,কিংবা রাতে স্বপ্নে বীর্যপাত ঘটার ফলে এগুলো মানুষকে ক্ষয় করে দেয় ক্রমাগত। এবং কসমিক সেক্সের দেহতাত্বক কথা-বার্তা মানুষকে কাম নিয়ন্ত্রেরও রাস্তা বাতলে দেয়,যা কামুককে প্রেমিক আর কামিনিকে প্রেমিকা করে। এই কামোত্তেজনা থেকে বিরত থাকতে সাবধান বাণীর মতোন উচ্চারণ করে সাধনাকে বলতে শুনি, খবরদার! শরীরের সুখের জন্য কামের ফাঁদে পড়োনা। দেহ সাধনায় সবচেয়ে বড় কাজ হলো দমের কাজ। এই দমকে কাজে লাগিয়ে দেহ রসের পথগুলো বন্ধ করো। মনে লোভ,অথচ বাহিরে ভালো মানুষের মুখোশ লাগিয়ে চলা মানুষদেরও চরমভাবে কটাক্ষ করে এই ছবি! মানুষ, সে যে ধর্ম-বর্ণ-গোত্ররেই হোক না কেনো, সে কোথাও স্বাধীন নয়, সে কামনার দাস। উপর দিয়ে সাধু ঋষির ভাব নিয়ে চলে, অথচ মনে থাকে যৌন ক্ষুধার বাসনা, লোভ। এই কামনার বশেই নিজের ব্যক্তি অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে সমাজে-রাষ্ট্রে,এতো খুনোখুনি,এতো সহিংসতা। এর থেকে পালানোর কোনো রাস্তা নেই, দেহতত্ব ছাড়া। - See more at: http://bangla.timesofdhaka.com/index.php?page=des&cid=0&news_id=7711#sthash.N1LMYBip.dpuf
মানে এক ধরণের পারস্পারিক সংঘাতময় একটি ব্যাপার আর কি! তবে কামকে যেহেতু উপেক্ষা করা সম্ভব না, তাই কামকে জয় করতে হবে রূপান্তরের মাধ্যমে। কামকে প্রেমে রূপান্তরিত করলেই কেবল মানুষের মুক্তি। মানুষকে মূল্যবোধ সম্পন্ন একজন হয়ে উঠতে হলে কাম,যৌনতাকে ত্যাগ করে নয় বরং জয় করেই হয়ে উঠতে হবে। কসমিক সেক্সের প্রধান উপজীব্য ‘সেক্স’ বা ‘কাম’ হলেও সমাজে ফকিরদের মূল্যায়ন,হিন্দু ব্রহ্মচর্য,শরিয়ত আর মারফতের যে দ্বন্দ্ব সমাজে জারি আছে তার সফল চিত্রায়ন করেন অমিতাভ চক্রবর্তী। ছবিতে ব্রহ্মচর্য যে প্রকৃতি বিরুদ্ধ একটি কাজ, তাও কৃপা ও সাধনা মায়ের কথোপকথনের মাধ্যমে আমরা বুঝে নেই। ব্রহ্মচর্য হচ্ছে কাম- বাসনাশূণ্য জীবন যাপন, যা আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য অপরিহার্য। অথচ দেহতাত্ত্বিকরা মনে করেন, সেক্স ত্যাগ করে ব্রহ্মচর্যা হয় না। কঠোর ব্রহ্মচর্যা পালন মারাত্মক ধরণের প্রকৃতি বিরুদ্ধ কাজ; তাছাড়া গুরুহীন সাধনায় কৃচ্ছ্রসাধনও হয় না। দেহতত্বের সাথে ব্রহ্মচর্যের এমন অমিলও খুবই নিখুঁত, অথচ প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপন করেন পরিচালক। ছবিতে ব্রহ্মচর্যার কথা বলতে গিয়ে গান্ধীজির কথাও আমরা শুনি, তিনি কিভাবে ব্রহ্মচর্যের পরীক্ষা দিতে গিয়ে নগ্ন হয়ে রাতে নারীদের সাথে ঘুমাতেন। অন্যদিকে শরীয়তী আর মারফতীবাদীদের আদর্শিক যে দ্বন্দ্ব সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, তারও প্রকোপ আমরা দেখি এই ছবিতে। সাধক গুরুর স্ত্রী আমিনার মৃত্যু সংবাদের মধ্য দিয়ে পরিচালক সেই প্রচলিত দ্বান্দিক ব্যাপারটা খুব চমৎকারভাবে আমাদের সামনে নিয়ে আসেন। শরিয়তি হুজুরদের চোখে মারফতি ফকিররা ধর্মীয় দৃষ্টিকোন দিয়ে কতোটা ঘৃণার পাত্র, তা সাধক গুরুর মৃত স্ত্রীর সমাজে ঘোর না পাওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা দেখি। নিজে শরিয়তি নিয়ম কানুন মানার পরও শুধুমাত্র মারফতি ফকিরের স্ত্রী হওয়ার দরুন আমিনার দাফন কিংবা জানাজা পড়ায়নি শরিয়তি মৌলানা-হুজুরগণ! ছবিটি বাউল দর্শন আর দেহতত্বকে কেন্দ্র করে হলেও পরিচালক এর মাধ্যমে বোধয় আমাদের যাপিত জীবনে সেক্স সম্পর্কে সচেতনত করারও প্রয়াস খুঁজেছেন। এই যেমন সাধনাকে দেখি কৃপাকে কাম সম্পর্কে তাত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে খোলাখুলি জ্ঞান দিচ্ছে, সেক্স কি, এর উৎস কোথায়; যাপিত জীবনে সেক্সের প্রভাব কতোটুকু। কাম প্রথমে মনে জাগে, তারপর শরীরে। হস্তমৈথুন,কিংবা রাতে স্বপ্নে বীর্যপাত ঘটার ফলে এগুলো মানুষকে ক্ষয় করে দেয় ক্রমাগত। এবং কসমিক সেক্সের দেহতাত্বক কথা-বার্তা মানুষকে কাম নিয়ন্ত্রেরও রাস্তা বাতলে দেয়,যা কামুককে প্রেমিক আর কামিনিকে প্রেমিকা করে। এই কামোত্তেজনা থেকে বিরত থাকতে সাবধান বাণীর মতোন উচ্চারণ করে সাধনাকে বলতে শুনি, খবরদার! শরীরের সুখের জন্য কামের ফাঁদে পড়োনা। দেহ সাধনায় সবচেয়ে বড় কাজ হলো দমের কাজ। এই দমকে কাজে লাগিয়ে দেহ রসের পথগুলো বন্ধ করো। মনে লোভ,অথচ বাহিরে ভালো মানুষের মুখোশ লাগিয়ে চলা মানুষদেরও চরমভাবে কটাক্ষ করে এই ছবি! মানুষ, সে যে ধর্ম-বর্ণ-গোত্ররেই হোক না কেনো, সে কোথাও স্বাধীন নয়, সে কামনার দাস। উপর দিয়ে সাধু ঋষির ভাব নিয়ে চলে, অথচ মনে থাকে যৌন ক্ষুধার বাসনা, লোভ। এই কামনার বশেই নিজের ব্যক্তি অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে সমাজে-রাষ্ট্রে,এতো খুনোখুনি,এতো সহিংসতা। এর থেকে পালানোর কোনো রাস্তা নেই, দেহতত্ব ছাড়া। - See more at: http://bangla.timesofdhaka.com/index.php?page=des&cid=0&news_id=7711#sthash.N1LMYBip.dpuf
Comments